২০১৩ ও ‘১৪ সালে আমি বেশ কয়েক মাস যাবৎ ভেবেছিলাম, সজীব নামে সুদর্শন ছেলেটিকে জন্ম দিয়েছিল যে মহিলা সে না জানি কত সুন্দর! অবশেষে সে মহিলাকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার, ফটোগ্রাফের মাধ্যমে। মধ্যবয়সেও মহিলা বেশ সুন্দরী ও স্বাস্থ্যবতী, বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে যথেষ্ট পর্দা করে (মাথায় ঘোমটা দিয়ে) সে ফটো তুলেছিল।
জানতাম সে মহিলা বিধবা, বিশেষ করে তার গোপনাঙ্গ হতে প্রায়ই রক্তক্ষরণ হয় – এ ব্যাপারটি যখন জানতে পারলাম, তখন তাকে বিয়ে করার বিষয়টি আমার মাথায় আসে। ভাবলাম, তাদের অভাবের সংসার, যদি আমি মহিলাকে বিয়ে করে তাদেরকে মাসে মাসে অন্ততঃ দশ হাজার টাকা করেও ভরণপোষণের খরচ দেই, তবুও তো ওদের অনেকখানি উপকার হবে। প্লাস, নিজের যৌবনজ্বালা মেটানোর জন্যও আরেকটা নারীদেহের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলাম তখন, শুধু বউকে ‘করে’ আর চলছিল না।
মহিলার গোপনাঙ্গের ময়লাগুলো যদি সহবাসের মাধ্যমে নিয়মিত তুলে আনতে পারতাম, তাহলে হয়তো স্বাস্থ্যসম্পর্কিত এতটা জটিলতায় ভুগতো না সে। আর সজীবের সাথেও তখন ভালো সম্পর্ক ছিল আমার। কিন্তু সজীব পরবর্তীতে সাঈদের সাথে ফিঁসফাঁস শুরু করে ও তাকে দুই নম্বরী উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেয়, তাই সজীবকে আর আগের মতো সহ্য করতে পারতাম না আমি।

প্লাস, বিয়ের বিষয়টি তারা আদৌ গোপন রাখবে কিনা সে বিষয়েও যথেষ্ট সন্দিহান ছিলাম, আমার প্রথম বউ যদি ব্যাপারটা জানতে পারে, তাহলে তুলকালাম কাণ্ড ঘটাবে; মামলা-মোকদ্দমা তো করবেই আমার নামে। সজীবের মা’র মতো একজন ‘ব্যবহৃত’ মধ্যবয়ষ্কা মহিলাকে বিয়ে করাই তো অনেক বড় স্যাক্রিফাইস, তাকে নিয়ে প্রকাশ্যে সংসার করার কোনো প্রশ্নই আসে না। কেবল মাসে দু’-তিন বার গিয়ে তার দেহ ভোগ করে আসা আর মাস শেষে একটা অ্যামাউন্ট হাতে ধরিয়ে দেয়া – এটাই ছিল আমার প্ল্যান। কিন্তু সজীব সাঈদের সাথে হাত মিলিয়ে দু’ নম্বরী উপায়ে যখন ইনকাম শুরু করলো, তখন আমার ‘১০ হাজার’-এর প্রস্তাব যে তার কাছে নস্যি মনে হবে, সেটা বুঝতে আমার সময় লাগে নি। তাই তার মা’র চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিলাম।
কে এই সজীব হাশিম খান?
এই সজীবের সাথে আমার পরিচয় ২০১৩ সালে একটি গাইডবুক পাবলিকেশন্স প্রতিষ্ঠানে। তার বাড়ি বি.বাড়িয়ার বিজয়নগরে। আচরণগত সমস্যা তার খুব একটা ছিল না, তবে সে ছিল পল্টিবাজ। সে যখন প্রুফরিডার হিসেবে কাজ পাচ্ছিল না এবং ২ টাকা পকেটে নিয়ে ১৭ দিন কাটিয়েছে, এমন একটা সময়ে আমিই তাকে ব্রেকথ্রু এনে দেই; ফারহানাহ এবং সাঈদ ভাইয়ের কাছে তার নামে সুপারিশ করি, যাতে তাকে বেশি করে কাজ দেয়। আফটার অল তার পিতা দু’-তিন বছর আগে মারা গেছেন এবং তার পড়াশুনার খরচ তথা তার মা-বোনের সংসারের খরচ দেয়ার মতো কেউ ছিল না।
কিন্তু সজীব সাঈদের সাথে মেশার সুযোগ পেয়ে তার ফাঁদে পা দেয়, দু’জনে মিলে কোম্পানীর টাকা লোটপাট শুরু করে। অবশ্য এক্ষেত্রে সাঈদকেও সরাসরি দোষ দিয়ে লাভ নেই, কারণ আমাকে জব্দ করার জন্য সুনীল ও বীথি মিলে একটি কাল্পনিক অভিযোগ তোলে – আমি আর সাঈদ মিলে নাকি কোম্পানীর টাকা লোটপাট করছি। দোষ না করেই যেহেতু ব্লেইম নিতে হচ্ছে, তাই তখন সাঈদ দুর্নীতিটা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
যত যাই হোক, সজীবকে আমার কাছে পল্টিবাজ মনে হয়েছে। বিশেষ করে সে একবার যখন আমার ফোন রিসিভ করছিল না, তখন তার উপর আমার ব্যাপক রাগ হয়, যেটা এখন পর্যন্ত মন থেকে সরিয়ে ফেলতে পারি নি। আফটার অল, আমি তো একজন সাধারণ মানুষ – যেটা আমি আগেই ডিক্লেয়ার করেছি।
এবার সজীবকে মন্দ বলার কারণ একটু অন্যভাবে ব্যাখ্যা করি। ধরুন, যে পাপে আমি পাপী সে পাপে সে নিজেও পাপী। শুধু পার্থক্য এই যে, আমার পাপের কথা অনেকেই জানতো, আর তার পাপের কথা কেউ জানতো না (হয়তো শুধু সাঈদ ও সজীবের ঘনিষ্ঠ জনেরা জানতো, কারণ একই পাপে তারাও পাপী ছিল)। এই সুযোগে সে ‘পাট’ নিয়েছে ও ফেসবুকে আমার বিরূদ্ধে পরোক্ষ স্ট্যাটাস দিয়েছে। আমার সাথে এ ধরনের আচরণ সে না করলেও পারতো, কারণ আমি ছিলাম তার এক সময়কার ত্রাণকর্তা।
ফোন রিসিভ না করার ঘটনার পর থেকে সজীবের সাথে আমার যোগাযোগ টোটালি বন্ধ, আর এখন দেখাও হয় না বললেই চলে – বছরে একবার বা দুইবার রাস্তাঘাটে দেখা হওয়াটাকে ‘দেখা হওয়া’ বলে না। গত বছর তার সাথে দেখা হয়েছিল মালিবাগে আর ২০১৭ এর ফেব্রুয়ারী মাসে দেখা হয়েছিল মহাখালীতে। ঐ সময় আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি ছিল, আর মহাখালীতে গিয়েছিলাম ছেলের জন্য ওষুধ বা পথ্য আনতে। তাই তখন ব্যস্ত থাকায় সজীবের সাথে বেশিক্ষণ কথা বলতে পারি নি।
এটা আবার সে সাঈদকে বলেছে, তাই সাঈদের সাথে যখন শান্তিনগর ফুটপাতে দেখা হয় কয়েক মাস আগে, সেও অনুরূপ ভাব নেয় আমার সাথে। আমি মনে মনে বলি, ‘ফকিন্নির পোলা, পলিটিক্স করে চাকুরিটা টিকিয়ে রেখেছিস্ কোনো মতে! আর আমিও একসময় তোকে টিকে থাকতে সাহায্য করেছিলাম, যখন তোর চাকুরির সুতা ছিঁড়ে যায় যায় এমন অবস্থা। আর এখন আমার লগেই ভাব লস্! তুই তো মনে হয় তোর জন্মদাতা পিতার সাথেও পল্টি নিতে পারবি।’