গরীব হলেই যে ছোটলোক হবে ব্যাপারটা তা না, কিন্তু গরীব হলে ছোটলোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ব্যাপারটা অনেকটা এই রকম, নবী মোহাম্মদ যখন মিরাজে গেলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন যে, জাহান্নামের বেশিরভাগ বাসিন্দাই নারী। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি নারী হলেই যে জাহান্নামী হবেন, ব্যাপারটা তা না। কিন্তু নারী হলে জাহান্নামী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর কারণ সম্ভবত আপনারা জানেন।
হুজুররা তো বেপর্দা নারীদেরকে দেখতেই (সহ্য করতে) পারেন না। গত শুক্রবার জুম্মার সময় এক মসজিদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন সেখানকার ইমাম খুতবা দিচ্ছিলেন, ‘এখন যেখানেই যাই, কেবল মেয়ে আর মেয়ে!’। এ বিষয়ে আমিও হুজুরদের সাথে একমত, যদিও আমি একজন নাস্তিক। আমার আপত্তি সেই সকল নারীদের বিষয়ে, যারা ছেলেদেরকে লেজে খেলাতে চান। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য দেখতে পারেন নিম্নোক্ত ইউটিউব ভিডিওতে।
https://www.youtube.com/watch?v=iQGVYSOf4zQ
যা হোক, বলছিলাম ছোটলোকদের বিষয়ে। কীভাবে ছোটলোকদেরকে চিহ্নিত করবেন? অথবা, ছোটলোকদের বৈশিষ্ট্য কী কী? ছোটলোকদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো – এরা মনে করে, সমাজ এদেরকে ঠকিয়েছে। তাই এরা প্রতিশোধ নেবার জন্য সবসময় ভেতরে ভেতরে জ্বলতে থাকে। এ জ্বলুনির বিষয়টি সবাই বুঝবে না। কেবল যারা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সপার্ট, তারা বুঝবে (যেমন, আমি)।
প্রতিশোধ নেবার জন্য তারা সুইটেবল ব্যক্তি খোঁজে, যাদেরকে তারা নিজের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে বলে মনে করে। এই সকল ‘উচুঁ স্তরের’ ব্যক্তিদের সাথে তারা সুযোগ পেলেই খারাপ ও দৃষ্টিকটু আচরণ করে, সিন ক্রিয়েট করে, তাদেরকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে।
আপনারা কি জানেন বা আন্দাজ করেছেন যে, ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটে এক শ্রেণির লোক উদ্দেশ্যবিহীনভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, আড্ডা দেয়। এদের উদ্দেশ্য আসলে অন্যের অনিষ্ট ঘটানোর মাধ্যমে নিজের বহুকাংখিত প্রতিশোধ নেয়া। এ ধরনের লোকই গণপিটুনির সুযোগ পেলে ছাড়ে না। এরা ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এমনকি অনেক নোংরা আচরণও করে, যেমনঃ এই করোনাকালীন সময়েও রাস্তায় কিছু লোক পাবেন, যাদের পাশ দিয়ে আপনি যাবার সময় উদ্দেশ্যমূলকভাবে আপনার গা ঘেঁষে থুতু ফেলবে, ড্রপলেট ছড়াবে। এরা আসলে জনমনে আতংক সৃষ্টি করতে চায়। তাই এদেরকে ‘আতংকবাদী’ বা সন্ত্রাসী বললেও ভুল হবে না।

অর্থাৎ ছোটলোকদের টার্গেট থাকে, কীভাবে ‘বড়লোক’দের জীবন হেল বা ‘জাহান্নাম’ বানানো যায়। বড়লোকদেরকে তারা সুকৌশলে টেনে-হিঁচড়ে নিজেদের লেভেলে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু বড়লোকেরা মুখে না বললেও ছোটলোকদের অপতৎপরতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তাই তারা সবসময় সাবধানে চলে। একারণেই ধনী পিতামাতা চান যাতে তাঁদের সন্তানটি গরীব পরিবারের কারো সাথে না মিশে, দরিদ্র পরিবারের কারো সাথে প্রেম-ভালোবাসা-বিয়ে না করে।
তবে সমাজ দিনদিন ছোটলোকদের বিষয়ে সচেতন হচ্ছে, তাই সমাজে বিভেদ ও অসহিষ্ণুতা কেবল বাড়ছে। এ সকল কারণে ইদানিং আর কেউ অন্যকে ছাড় দিতে রাজি নয়। আগে একটা সময় ছিল, যখন আপামর জনসাধারণের পেটে ভাত না থাকলেও একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা ছিল। তখন ধনী ও গরীবদের মাঝে পারস্পরিক আন্তরিকতা ও শ্রদ্ধাবোধ ছিল। কিন্তু গরীব শ্রেণির মধ্যে কিছু লোক ছোটলোকি শুরু করার পর পরিস্থিতি বদলে যেতে থাকে, বদলে যেতে থাকে দুনিয়া। তাই তো সবাই এখন দুনিয়াকে স্বার্থপর বলে।
পরিশেষে ধনী ও সুবিধাভোগীদেরকেও কিছু কথা বলতে চাই, আপনারা গরীবের রক্ত চুষে অর্থসম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবেন না। সেটা করলে এ পাহাড়ের নিচে চাপা পড়েই একদিন আপনাদের মৃত্যু হবে। সমাজ ধনী ও গরীব সবাইকে নিয়েই, সবার সাথেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে হবে। যার যেটা ন্যায্য পাওনা, তাকে সেটা দিন। কাউকে ঠকাবেন না, কারো ক্ষতি করবেন না। মনে রাখবেন, ধনী বা গরীব যাই হোন না কেন, একদিন এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে সবাইকে চলে যেতে হবে, সেদিন কবরে বাক্স-পেটরা নিয়ে যেতে পারবেন না। মানুষকে কতটুকু ভালোবাসলেন, সেটাই হবে আপনার রেখে যাওয়া স্মৃতির অংশবিশেষ।
Pingback: ছোটলোকদের কাজ হচ্ছে অপরকে স্টক (stalk) করা – সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা