মিষ্টি হাসির অভিনেত্রী রোজী আফসারির কথা মনে আছে? সিনেমায় কখনো দাপুটে নায়িকা, কখনো বা প্রতিনিধি, কখনো মা, বড় ভাবী, সংসারের বড় বৌ, এক বিধবা, মহিয়সী নারী চরিত্র, বাদশাহ মহলের নির্বাসিত বেগম কিংবা পরম শ্রদ্ধেয় বড় বোনের চরিত্রে দেখা মিলেছে তার । এমন নানা চরিত্রে অভিনয় করে সবার মন জয় করেছিলেন রোজী।
রোজি ছিলেন লক্ষীপুরের তথা বৃহত্তর নোয়াখালীর মেয়ে
সেই জনপ্রিয় নায়িকা রোজী আফসারীর ৭৩তম জন্মদিন ছিল কয়েকদিন আগে। ১৯৪৯ সালের ২৩ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ফেসবুকে অনেকেই জন্মদিন উপলক্ষ্যে স্মরণ করছেন তাকে। এ দিকে বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রোজী আফসারীকে সম্মান জানিয়ে তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে গুগল ডুডল প্রকাশ করেছে সার্চজায়ান্ট গুগল।
বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের অভিনেত্রী রোজী ১৯৬২ সালে আব্দুল জব্বার খান পরিচালিত ‘জোয়ার এলো’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। তবে তিনি জনপ্রিয়তা পান নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ ছবিতে অভিনয় করে।
রোজী আফসারী অভিনয়জীবনে ৪ দশক ধরে ৩৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে পাকিস্তানের ‘জাগো হুয়া সাবেরা’, ‘পুনম কি রাত’সহ ২৫টি উর্দু ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার সেরা চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সূর্য গ্রহণ’, ‘সূর্য সংগ্রাম’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
এছাড়া অন্যান্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘ওরা ১১ জন’, ‘লাঠিয়াল’, ‘এতটুকু আশা’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘অশিক্ষিত’, ‘প্রতিকার’ ইত্যাদি। তার সর্বশেষ অভিনীত ছবি ‘পরম প্রিয়’ ২০০৫ সালে মুক্তি পায়। মৃত্যুকালে প্রখ্যাত অভিনেত্রী রোজি আফসারী স্বামী মালেক আফসারী এবং এক মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
চার দশকের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে দাপটের সঙ্গে দ্যুতি ছড়ানো এ অভিনেত্রী ১৯৮৫ সালে বিয়ে করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মালেক আফসারীকে। বয়সে মালেক আফসারী তার ২০ বছরের ছোট হলেও দীর্ঘ ২২ বছর সংসার করেন তারা। ২০০৭ সালের ৯ মার্চ কিডনিজনিত রোগে মাত্র ৫৭ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন রোজী আফসারী।
বেগমগঞ্জের নাসিমা আন্টি
এই ব্লগে ‘নাসিমা আন্টির জ্বর এলো যে কারণে’ নামে একটি প্রবন্ধ রয়েছে, সেটি পড়লে জানতে পারবেন নাসিমা আন্টি কে। তিনি ছিলেন আমার এক প্রাক্তন ছাত্রের মা, তাঁর ছেলের নাম ছিল আসিফ। এই ছেলেটি ২০০৪ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়তো, সায়েন্সে। নাসিমার পৈতৃক বাড়ি ছিল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে, কিন্তু তার স্বামীর বাড়ি ছিল লক্ষীপুরে (যা বৃহত্তর নোয়াখালীর অংশ); আর নায়িকা রোজি আফসারীর বাড়িও ছিল লক্ষীপুরে। তাই নাসিমা আন্টি রোজিকে নিজের দেশি লোক (নোয়াখাইল্লা) মনে করে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন। অর্থাৎ নিজের চেয়ে বহু বছরের ছোট ছেলেকে (আমাকে) শয্যাসঙ্গী করতে চেয়েছিলেন।
জানতে পেরেছি, বিবাহের পূর্বে রোজি মালেক আফসারীর সাথে দীর্ঘদিন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলেন, অর্থাৎ লিভ টুগেদার করেছিলেন। তখনকার দিনে সেটা তিনি কেমন করে পারলেন, তা তিনি ও তাঁর খোদাই ভালো বলতে পারবেন। রোজি নাকি এ ধরনের সম্পর্ক কন্টিনিউ করার ব্যাপারেই আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু মালেক আফসারীই তাঁকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য করেন।
যাই হোক, তিনি যেহেতু একজন সেলিব্রেটি, তাই এই জিনিসটা তাঁর মাথায় রাখা উচিত ছিল যে, তাঁর দেখাদেখি আরো অনেকেই লিভ টুগেদারের বিষয়ে আগ্রহী হতে পারে। আমার তো মনে হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে মিডিয়া জগতে এতো যে লিভ টুগেদার ও পরকীয়া হয়, সে প্রথা চালু করে গিয়েছিলেন রোজি আফসারীর মতো কয়েকজন মহিলা। অর্থাৎ এসব আকাম-কুকামের পুরোধা তাঁরা।
ব্যাপারটা আরো বেশি নোংরা শোনায় যখন দেখি বয়সে বহু বছরের ছোট ছেলের সাথে লিভ টুগেদার বা অবৈধ সেক্স করেছেন তাঁরা। তাই তো রোজি আফসারীর দেখাদেখি নাসিমা আন্টিও আমার সাথে শোয়ার জন্য অস্থির হয়ে গেলেন, তাঁর স্বামী বেঁচে থাকতেই। অবশ্য তাঁর সাথে শুতে আমার কোনো আপত্তি ছিল না, তবে আমি আসলে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইছিলাম; যাতে তিনি কখনো বলতে না পারেন যে, আমি তাঁকে জোরপূর্বক যৌন হয়রানি করেছি, বা আমাদের দু’জনের মাঝে কোনো মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং যাতে না হয়।
তবে আন্টির প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি সময় নিয়ে ফেলছিলাম বোধ হয়, তাই বিরক্ত হয়ে আমাকে টিউশনি থেকে ছাড়িয়ে দিলেন। আশা করি, পরবর্তীতে তিনি সুইটেবল বেড পার্টনার বা সেক্স পার্টনার খুঁজে পেয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে তাঁর স্বামী অর্থাৎ আসিফের আব্বার ভূমিকা কী ছিল সেটাই ভাবছি। তিনিই বা কী ধরনের মানুষ, এসব অনাচার শুধু মেনেই নেন নি, বরং এ বিষয়ে তাঁর সরাসরি সমর্থন ছিল।
উল্লেখ্য যে, চেহারা, গলার স্বর, কথা বলার ভংগি, উচ্চতা, শারীরিক গঠন, গায়ের রঙ প্রায় সব দিক থেকে নাসিমা আন্টি রোজি আফসারীর মতো ছিলেন। তাঁকে কাছ থেকে যে-ই প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাবে, সে-ই তাঁকে রোজি আফসারীর স্বজন ভেবে ভুল করবে। নাসিমা আন্টি অবশ্য রোজির দূরের কেউ নন, কারণ তারা উভয়ে গ্রেটার নোয়াখালীর মেয়ে। প্লাস, চিত্রজগতের কেউ নাসিমা আন্টির রিলেটিভ হয় কিনা, সে ব্যাপারে কোনোদিন তাঁকে জিগ্যেস করা হয় নি। হয়তো খোঁজ নিলে দেখা যাবে, রোজি আফসারী সত্যিই তাঁর রিলেটিভ হন। উদাহরণস্বরূপঃ কে বলবে যে, সুবর্ণা মুস্তফার মতো একজন তারকা আমার রিলেটিভ হবেন, অথচ আদতে তিনি আমার শ্বাশুড়ির আপন কাজিন।
যাই হোক, নাসিমা আন্টি দেখতে রোজির মতো হওয়ায় জীবনটাও হয়তো সাজাতে চেয়েছিলেন রোজির মতো করেই, আর তাইতো আমার মতো একটা ইয়াং ছেলের পিছে লাগলেন তাঁর জীবনের ‘মালেক আফসারী’ মনে করে।