সাইকো। পারভার্ট। না কি অন্য কিছু। আজব চোর! তার নেশাও আজব। চোরের কুকীর্তিই এখন চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। মহিলাদের অন্তর্বাস থেকে ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন চুরি করাই তার নেশা!
দিনের পর দিন এই কাণ্ড ঘটছিল কয়েকটি গ্রামে। মহিলাদের পোশাকও চুরি যাচ্ছিল। গ্রামবাসীরা ওত পেতে ছিলেন কয়েকদিন ধরে। রাতের অন্ধকারে অন্তর্বাস চুরির সময় হাতেনাতে ধরেও ফেলেন ‘মহিলা চোরকে’। দৌড়ে পালাতে থাকে চোর। পিছু নেওয়ার পর স্থানীয়রা বাঁকের মুখে দেখেন নাইটি পরা ‘মহিলা’ নেই। তবে মিডি জাতীয় পোশাকে অন্য এক ‘মহিলা’। তাকে ধরতেই বেরিয়ে পড়ে ভিতরের পোশাকের একাংশ। নিমেষে পোশাক বদলালেও চোর ধরা পড়ে যায়।
কিন্তু এর পরের ঘটনা আরও তাজ্জব করে দেয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার খেতুরা গ্রামের সকলকেই। মহিলার বেশে চোর আসলে পাশের পাড়ারই এক যুবক। উত্তম-মধ্যম দেওয়ার পর আরও চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে আসে। পরনে মহিলার পোশাক। অন্তর্বাসও পরে রয়েছে মহিলাদের। চুরি করতেই মহিলার বেশ ধরেছিল সে। কিন্তু অন্তর্বাস ও ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন চুরি করত কেন?
খেতুরার শাহ পাড়ার বাসিন্দা পেশায় গাড়ির খালাসি বছর তিরিশের যুবক সুরজ শাহ মারের চোটে জানিয়েছে, গত এক বছর ধরে নিজের গ্রাম ছাড়াও পাশের গ্রামেও এইভাবে চুরি করত। তার পর অন্তর্বাস ও ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন পুড়িয়ে তার গন্ধ শুঁকে নেশা করত।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গ্রামের ডিভিসি-র সেচখালের পাড়ে বিভিন্ন সময় তাঁরা পোড়া পোশাক, অন্তর্বাস ও ন্যাপকিনের অংশ বিশেষ দেখেছেন। তাঁরা এরপরই নিশ্চিত হন ওই কাজ সুরজই করেছে।
গ্রামবাসীরা জানান, গত এক বছর ধরেই স্কুল বা কলেজছাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক ও অন্তর্বাস চুরি হচ্ছিল। কিন্তু চোরকে তাঁরা ধরতে পারছিলেন না। গ্রামের কয়েকজন যুবক গত কয়েকদিন ধরে নজরদারি শুরু করেছিলেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই চোরকে ধরে ফেলেন তাঁরা। তার পর খুঁটিতে বেঁধে ব্যাপক মারধর করা হয়।
মার খেয়ে চুরির কথা স্বীকার করেছে। বিকৃত নেশার কথাও জানিয়েছে গ্রামবাসীদের। তবে গ্রামেরই কয়েকজন বয়স্ক মানুষ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের কাজ না করে তার জন্য সতর্ক করা হয়েছে তাকে।
অন্তর্বাস বা স্যানিটারি ন্যাপকিন পুড়িয়ে নেশা করার কথা, বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জে এমন ঘটনা অন্তত অনেকেরই জানা নেই। নেশাগ্রস্তদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর কাজে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্তা জানিয়েছেন, এই ধরণের নেশা কারও রয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই। তাঁর কথায়, ওই যুবক মানসিক বিকারগ্রস্ত। তার চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন।