আজ (১৬ জুন, ২০২১) দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিএমআরসি কর্তৃপক্ষ দেশী ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানী গ্লোব বায়োটেক এর কোভিড-১৯ টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’ এর অনুমোদন দিয়েছে। এই টিকা বিভিন্ন প্রাণীতে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করতে সক্ষম, এমনটি প্রমাণ পাবার পর গ্লোব কর্তৃপক্ষ হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমোদনের জন্য আবেদন করে, সেই ফেব্রুয়ারী মাসে। কিন্তু এতোদিন কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়াশব্দ দেয় নি, কী কারণে অনুমোদন আটকে রেখেছে – সে বিষয়েও কোনো খোলাসা করে নি। তাই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ জনগণের মাঝে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছিল।
জনগণ যা ভেবেছিল
জনগণ ভেবেছিল, সরকার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এর মতো বড়বড় কোম্পানীগুলোকে একচেটিয়া ব্যবসায়িক সুবিধা পাইয়ে দেবার উদ্দেশ্যে এতোদিন যাবৎ গ্লোবের টিকার হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমোদন আটকে রেখেছিল। এখন, ট্রায়ালের অনুমোদন দিলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বেক্সিমকো টাইপ কোম্পানীর কোনো আর্থিক স্বার্থ জড়িত আছে কিনা, সে বিষয়ে দেশবাসী সন্দিহান। অর্থাৎ টিকা ট্রায়ালের অনুমোদন দিলেও তাঁরা এখনো সন্দেহের ঊর্দ্ধে নন।
যেমনটি ভাবতে চাই
আমরা ভাবতে চাই, ‘না, বেক্সিমকো ফার্মার সাথে আর্থিক স্বার্থের দরুন নয়, বরং জনগণের বৃহত্তর মঙ্গলার্থেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এতোদিন বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের অনুমোদন দেয় নি।’ এরকম ঈঙ্গিত সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক একবার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চায়না ও রাশিয়া অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশকে বলে আসছিল, ‘যদি টিকা নিতে হয়, তাহলে এদেশের মানুষের ওপরও ট্রায়ালের অনুমোদন দিতে হবে’। সরকার নাকি জনগণকে গিনিপিগ বানাতে চায় নি, তাই ট্রায়ালের অনুমতি দেয় নি। ট্রায়ালবিহীনভাবে টিকা নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে। সেটাও পুরোপুরি সফলও হতো হয়তো, যদি না করোনার তাণ্ডবে ভারত এভাবে নাকানিচুবানি খেত। করোনা শুরুর দিকে যেই ভারত আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো দেশকে স্বাস্থ্য উপকরণ পাঠিয়ে সাহায্য পাঠিয়েছে, তাদের অবস্থাই যে একদিন সঙ্গীন হব, এমনটা কেউ ভাবে নি হয়তো।
