আমাদের দেশের সমাজে চরিত্র বলতে মূলতঃ যৌন চরিত্রকে বুঝায়। কোনো ব্যক্তি কেবল একজন যৌনসঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত কিনা বা তাতেই সন্তুষ্ট কিনা, বাংলাদেশে চরিত্র বলতে সেটাই বুঝায়। এখানে চরিত্রহীন বলতে তাকেই বুঝায় যে একজন যৌনসঙ্গীতে খুশি নয়, বরং একাধিক সঙ্গীর সাথে শুয়ে অভ্যস্ত। তাই তো মঈনুল ইসলাম যখন মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বললেন, তখন মাসুদা খেপে গিয়েছিলেন এবং মঈনুলের বিরুদ্ধে মামলাও করে দিয়েছিলেন। সে মামলায় মঈনুল গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। এখন সে মামলার কী অবস্থা কে জানে! হয়তো মঈনুল মাসুদার সাথে মিলমিশ করে ফেলেছেন টাকার বিনিময়ে বা অন্য কোনো উপায়ে।
উপরে যেটা বর্ণিত হয়েছে সেটা আসলে যৌন চরিত্র। অর্থাৎ যৌনতার দিক থেকে একজন ব্যক্তি কী রকম সেটা। আমার হিসেব মতে, দেশে ‘যৌন চরিত্র ভালো’ এরকম লোকের সংখ্যা হাতে গোণা। যাদের যৌন চরিত্র ভালো, তাদের আবার অন্য সমস্যা থাকে। যেমনঃ বুদ্ধিশুদ্ধি কম থাকে অনেক ক্ষেত্রে, উদাহরণঃ আমার বউ এবং শ্বশুর। শ্বশুরমশায় অবশ্য মারা গেছেন দুই বছর আগে, তাঁর যৌন চরিত্র সলিড ছিল এমনটা শোনা যায়। কিন্তু অন্য সবদিক থেকে তিনি ছিলেন চরম দুই নম্বর।
তিনি কন্ট্র্যাক্টরি বিজনেস করতেন। ১৫ হাজার টাকার কাজ করিয়ে বিলে ২৫ হাজার টাকা লিখে রাখতেন। আর আত্মীয়-স্বজন বিবাহ দেয়ার ক্ষেত্রেও চরম দুই নম্বরী অবলম্বন করতেন। যেমনঃ নিজের ভাই ও বোনের বিয়ে দেয়ার সময় এক পাত্র বা পাত্রী দেখিয়ে অন্যজনের সাথে কৌশলে বিবাহ দিয়েছেন। এর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ হলোঃ আমার এক চাচীশ্বাশুড়ি খাদিজা বেগমের বিয়ের সময় প্রথমে আমার ছোট চাচাশ্বশুরকে দেখানো হয়েছিল, যিনি দেখতে বেশ সুদর্শন ছিলেন। পরে আসলে বিয়ে দেয়া হয় তৃতীয় চাচাশ্বশুরের সাথে, যিনি দেখতে বরাবরই নিতান্ত কুৎসিত ও ছোট-খাট।
অর্থাৎ আমার পয়েন্ট হলো, একজন ব্যক্তি যৌন চরিত্রের দিক থেকে সলিড হলেও বিশাল মাপের ঠগবাজ হতে পারেন লোকজনের সাথে অন্যান্য লেনদেনের বিষয়ে। এছাড়া শ্বশুরের বিরুদ্ধে আমার ব্যক্তিগত অভিযোগও রয়েছেঃ তিনি ও তাঁর বউ মানে আমার শ্বাশুড়ি মিলে আমার ছাত্রজীবন তথা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নষ্ট করেছেন; তাঁদের কারণে গ্র্যাজুয়েশন করতে আমার কয়েক বছর বিলম্ব হয়। এছাড়া শ্বশুরসাহের একবার আমাকে একটা টেকনিক্যাল চাকুরির লোভ দেখিয়ে অন্য একটি ভালো বেতনের চাকুরি হতে ছাড়িয়ে নিয়েছিলেন, কিন্তু পরে সে চাকুরিটা আর দিতে পারেন নি।
https://www.youtube.com/watch?v=uqs5PQIALVM
আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম, তখন বরাবরই আমার কনফিডেন্স ছিল যে, আমি নিজের চাকুরি নিজে খুঁজে নিতে পারব, অন্ততঃ এ বিষয়ে কারোর হেল্প দরকার হবে না আমার। কিন্তু আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি আমার এ কনফিডেন্স ভেঙেছেন বেশ কয়েক বছর ধরে, সময় নিয়ে; তাঁরা আমার কানের কাছে কেবল ঘ্যানঘ্যান করতেন (চাপাবাজি), ‘তুমি শুধু পাশ কর, তোমাকে চাকুরি দেয়ার দায়িত্ব আমার।’ তাছাড়া আমার শ্বশুরের আরো বহুবিধ সমস্যা ছিল।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিরক্তিকর একজন ব্যক্তি, প্রায় সবসময়ই গলায় ঘোৎঘোৎ করতেন (গলা খাঁকড়াতেন), ক্রমাগত এ ধরনের শব্দ দূষণ মেনে নেয়া কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব বলে আমি মনে করি না। কীভাবে তাঁর সাথে আমার শ্বাশুড়ি ও তাঁর সন্তানেরা থাকতেন, সেটা আল্লাহই মালুম। এছাড়া ব্যক্তিগত হাইজিনের ব্যাপারে সাংঘাতিক সমস্যা ছিল তাঁর, প্রায়ই হাত না ধুয়ে ও লুঙ্গি কাঁছা দেয়ার মতো করে পরে ভাত খেতেন। অর্থাৎ যৌবনকালে সুদর্শন হলেও পৌঢ় ও বৃদ্ধ বয়সে চরম একটা ‘কামলা’ লুক ধারণ করেন আমার এই শ্বশুর।
এসব বলার পেছনে আমার পয়েন্ট হলো, একজন ব্যক্তির যৌন চরিত্র ভালো হলেই সে গ্রহণযোগ্য হয়ে যায় না, তাকে অন্যান্য সবদিক থেকেই ভালো হতে হয়। আর আমার মতে, ‘যৌন চরিত্র’ খারাপ বলে কিছু নেই, মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই বহুগামী। এসব শুনে আবার ভেবে নিয়েন না যে, আমি নিজেও বহুগামী। আমি বহুগামী হতাম যদি সুযোগ পেতাম। যেহেতু সুযোগ পাচ্ছি না, তাই আমি মনোগ্যামি; কারণ পতিতাদের কাছে যাবার ইচ্ছে আমার নেই; যৌন অসুখ, অপরিচ্ছন্নতা ও ‘তারা তাড়াহুড়া করে’ – এ সকল কারণে। এছাড়া কয়েকজন মেয়ে ও মহিলার সাথে যৌনতার সুযোগ সৃষ্টি হলেও হয় আমি সেগুলো বোকামি করে হারিয়েছি, অথবা তাদেরকে কোনো কারণে অপছন্দ করায় বা ধান্ধাবাজ মনে হওয়ায় অ্যাভোয়েড করে গিয়েছি। তবে এখনো ভালো কোনো যৌনসঙ্গীর খোঁজ পেলে আমি বহুগামী হতে রাজি, কারণ আমি ফিল করি, ‘সারাজীবন বউকে লাগিয়ে জীবন চলে না!’।
তাছাড়া বললামই তো, দেশে যারা ‘মনোগ্যামি’ বা ‘সঠিক যৌন চরিত্রের’ বলে নিজেদেরকে প্রমাণ করতে চায়, তাদের ৯৯%-এরই সমস্যা রয়েছে, অর্থাৎ এগুলো শুধু অভিনয় আর ভান, আসলে তারা পলিগ্যামি। আমি তাদের মতো ভং ধরতে জানি না, বা চাইও না। হিপোক্র্যাসি করতে পারব না, তাই আমি স্বঘোষিত ‘কাফির’, যাতে কেউ আমাকে মুনাফিক বলতে না পারে। যেমনঃ এ ব্লগে এক ক্যারিয়ারিস্ট মাগির কথা একাধিকবার বলা হয়েছে। সে সাম্প্রতিক সময়ে ২৯টা রোজাই রেখেছে বলে শুনেছি, তবে সে আসলে পলিগ্যামি। অর্থাৎ রোজার এক মাস বাদে বাকি সময়টা সে আকাম-কুকাম করে বেড়ায়।
সে নিজের দেবর, অফিসের সহকর্মী, রিপোর্টিং বস, ডিরেক্টরসহ একাধিক ব্যক্তির শয্যাসঙ্গী হয়েছে বলে আমার এস্টিমেশনে পাই। কিন্তু সে তো নিজেকে সলিড যৌন চরিত্রের ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণ করতে ব্যস্ত। আমি যখন তাকে যৌনতার প্রস্তাব দিলাম, তখন সে ‘দুধে ধোয়া তুলসী পাতা’র মতো অভিনয় করলো। আসলে সে ঐ সকল ব্যক্তির সাথে শুতে রাজি, যাদের সাথে শুলে তার ক্যারিয়ারে উন্নতি ঘটবে। এদিক থেকে বলা যায়, সে বেশ হিসেবী। হ্যাঁ, তাই তো! আমার সাথে সে শুতে যাবে কেন? আমার সাথে কীসের স্বার্থ তার?! যারা কিনা এভাবে নিজের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য পলিগ্যামি হয়, তারা অবশ্য এক দিক থেকে ভালো। বেছে বেছে যৌনসঙ্গী ঠিক করার কারণে তাদের বিভিন্ন যৌনরোগ যেমনঃ এইচআইভি কম হয়।
এভাবে একাধিক ব্যক্তির সাথে শোয়া খারাপ কিছু নয়, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমি ‘খারাপি’ দেখেছি। যেমনঃ হিন্দু ব্যক্তিদের অনেকেই বিবাহের ক্ষেত্রে বেশ দেরী করে, এসময়টায় তারা বিপরীত লিঙ্গের বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে কৌশলে ও ঠকিয়ে সেক্স করে থাকে, যা আসলে ঠিক নয়। আমার নিজেরও এ ধরনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। জুপিটার পাবলিকেশন্সে যখন চাকুরি করতাম, তখন কৃষ্ণা সাহা নামে এক সমবয়সী হিন্দু নারী আমাকে তার যৌনসঙ্গী বানাতে চেয়েছিল, সেটা করতে না পেরে সে আমার পিছে লাগে। এক্ষেত্রে আমারও কিছু দোষ ছিল, যেমনঃ জুপিটারে কলিগদের কাছে নিজের ‘বিবাহিত’ স্ট্যাটাসটা ফ্ল্যাশ করি নি। তাই কৃষ্ণার সাথে জড়ানো আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না, কারণ সে আমাকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে সেটা করতে চাচ্ছিল। দ্বিতীয় বিবাহ করতে হলে তো সেই রকম ‘মাল’ দরকার, তাই না? কৃষ্ণা তো তেমন আকর্ষণীয় ছিলই না, উল্টো আগেই একাধিক ব্যক্তির যৌনসঙ্গী ছিল বলে রিপোর্ট পাই।
এছাড়া অন্য একটি পাবলিকেশন্সে কর্মরত বিথীকা রাণি মুন্সি নামে আরেক হিন্দু নারী আমাকে তার যৌনসঙ্গী বানাতে চেয়েছিল, সে আমার চেয়ে তিন বছরের বড় ছিল। তার বয়স যখন ৩৭ তখন সে আমার সাথে শোয়ার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে। তার সাথে শুতে আমার কোনো সমস্যা ছিল না, আফটার অল সে জানতো যে, আমি আগে থেকেই বিবাহিত। তবে সে ভেতরে ভেতরে আমার শত্রু ছিল, অফিসে আমি বেশি ইনকাম করতাম বলে সে আমার পিছনে লেগে ছিল। তার একটি ধারণা ছিল, আমি অফিস থেকে দুই নম্বরী উপায়ে অর্থ কামাচ্ছি যেটা আদতে সত্য নয়। এই কাজটা আসলে সে করতো (দুই নম্বরী); তো, ব্যাপার হলো, সে আমাকে আর আমার রিপোর্টিং বসকে নিয়ে কাল্পনিক অভিযোগ তোলায় শেষ পর্যন্ত তার সাথে এক বিছানায় শোয়া সম্ভব হলো না আমার পক্ষে। তার সাথে শুলে আমার শুধু ‘যৌন চরিত্রের’ হানি হতো, অভারওল নৈতিক চরিত্রের নয়; আর তার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কারণ আমরা দু’জনে শুধু শারীরিক সুখ পাবার আশায় একে অপরের ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করেছিলাম, অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়। বর্তমানে বীথি রতন ঘোষ নামে এক সরকারি কর্মকর্তাকে বিবাহ করে ‘বীথিকা রাণি ঘোষ’ নাম ধারণ করেছে।
যাই হোক, মোদ্দা কথা হলো অর্থাৎ আমার মেইন পয়েন্ট হলো, কারো যৌন চরিত্র খারাপ হলেই তাকে বর্জনীয় ভাবার কোনো কারণ নেই; দেখতে হবে, সে কী ধরনের যৌনসঙ্গী বেছে নিচ্ছে। যদি সে ‘সেইফ’ যৌনসঙ্গী বেছে নেয়, তাহলে সে ওকে। আর যদি রিস্কি যৌনসঙ্গী বেছে নিতে থাকে (যেমনঃ পতিতা), তাহলে তাকে ভালো চোখে দেখার কোনো কারণ নেই। ‘সেইফ’ যৌনসঙ্গী বেছে নেয় এমন কোনো ব্যক্তি যদি অন্যান্য দিক থেকে ‘ওকে’ থাকে, যেমনঃ বেশ বিশ্বস্ত ও আচরণ ভালো হয়, তবে তাকে সামাজিক বলে ধরে নিতে হবে এবং তার সাথে সব ধরনের কাজ-কর্ম ও লেনদেন করা যেতে পারে। এ ধরনের ব্যক্তি যাদের আচরণের ধরন পাল্টায় না বললেই চলে এবং যারা সুযোগসন্ধানী নয়, বরং বিশ্বস্ত তাদেরকেই সত্যিকার ‘চরিত্রবান’ লোক হিসেবে ধরে নিতে হবে। আর এটাকেই বহির্বিশ্বে চরিত্র বা ‘ক্যারেকটার’ বলে।
স্মার্টনেস আসলে কী?
স্মার্টনেস হলো বুদ্ধিমত্তা ও মস্তিষ্কের প্রখরতা। এটাই স্মার্টনেসের সঠিক সংজ্ঞা। কিন্তু আমাদের দেশে মনে করা হয়, যারা পরিচ্ছন্ন, ফিটফাট পোশাক পরে এবং চটচট করে কথার জবাব দিতে পারে, তারাই স্মার্ট। অনেক শিক্ষিত লোকেরা এটাকেই স্মার্টনেসের সংজ্ঞা হিসেবে ধরে নিয়ে চাকুরি ক্ষেত্রে কেবল এ ধরনের লোকদেরকেই নিয়োগ দিতে আগ্রহী হন। পরিচ্ছন্নতা ও ফিটফাট থাকা যদিও জরুরী, তবে এগুলোর সাথে আরো কিছু দিকে নজর দিতে হবে কর্মী রিক্রুটের ক্ষেত্রে, আর সেটা হলো দৃষ্টিভঙ্গী। অনেকের দৃষ্টিভঙ্গী সঠিক নয়, এমনকি তারা সাধারণ লোকজনকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে, নিজের চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা কাউকে দেখলেই ‘ঈর্ষাণ্বিত’ হয়ে পড়ে এবং তার ক্ষতি ঘটাতে চায়। এ ধরনের লোকেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খুব চতুর হয়ে থাকে, ফলে এদের স্বরূপ উদঘাটন করা চাট্টিখানি কথা নয়।
এজন্য নিয়োগকর্তাদেরকে আরো ধুর্ত হতে হবে এবং তাদের মাঝে কমপক্ষে একজন সাইকোলজিস্ট তো থাকতেই হবে। শুধুমাত্র পোশাক-আশাক ও কথাবার্তার ফিটনেস দেখে সিলেক্ট করা হলে ভুল লোক সিলেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি এরকম বহু কেস দেখেছি যে, লোকটি দেখতে পরিচ্ছন্ন ও ফিটফাট হলেও পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অশোভন আচরণ করে, যেমনঃ তুচ্ছ কারণে সহযাত্রীর সাথে মারামারি লাগিয়ে দেয়, বাপ-মা তুলে গালাগালি করে, অসহায় ও দুর্বলকে অত্যাচার করে, এমনকি ছোটখাট অশোভন কাজকর্মও করে, যেমনঃ নাক খোঁটাখুঁটি করা, খালি হাতে নাক ঝাঁড়া, বিনা কারণে (পাশের জনকে বিব্রত করতে) গলা খকখক করা ইত্যাদি। এখানে যে আচরণগুলোর কথা বললাম, সেগুলো স্মার্ট লোকের কাজকর্ম হতে পারে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশই বোধ হয় একমাত্র দেশ যেখানে যাদেরকে সমাজে ‘স্মার্ট’ হিসেবে ধরে নেয়া হয়, তাদের অনেকেই রাস্তাঘাটে ও চলার পথে এ ধরনের অশোভনীয় আচরণ করে থাকে।
বিদেশে স্মার্টনেস মানে হলো বুদ্ধিমত্তা ও মস্তিষ্কের প্রখরতা, যেমনটা আগেই বলা হয়েছে। যেমনঃ আইনস্টাইনকে সর্বকালের সেরা একজন স্মার্ট লোক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আদতে তিনি কী প্রকৃতির লোক ছিলেন, সেটা সবাই বোধ হয় জানেন। তিনি একই ধরনের পোশাক ডেইলি পড়তেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ‘ব্যাগি’ বা অতিরিক্ত ঢিলেঢালা টাইপের। চুল আঁচড়াতেন না বললেই চলে, এমনকি পার্সোনাল হাইজিনেও তাঁর সমস্যা রয়েছিল বলে জানা যায়। তিনি চটপট উত্তর দিতে পারতেন না, যেমনঃ একবার যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘স্যার, বলেন তো, বায়ুতে শব্দের বেগ কত?’ তখন তিনি বললেন, ‘এসব তথ্য তো বইয়েই রয়েছে, তাই এগুলো আমার মাথায় ক্যারি করি না।’ তাহলে বোঝেন অবস্থা!
তার মানে এই না যে, আইনস্টাইন স্মার্ট ছিলেন না। সেটা তিনি অবশ্যই ছিলেন, উন্নত বিশ্বে স্মার্টনেসের যে সংজ্ঞা ব্যবহার করা হয়, সে অনুসারে তিনি অবশ্যই স্মার্ট। এবং বাংলাদেশেও সেটাই হওয়া উচিত। কাউকে স্মার্ট বলার আগে শুধু তার পোশাক-আশাক ও পরিচ্ছন্নতা দেখলেই চলবে না, তার জ্ঞানের পরিধি ও মানসিকতা সর্বোপরি গণমানুষকে ভালোবাসার সক্ষমতা আছে কিনা, সেগুলোও যাচাই করতে হবে।
তবে আইনস্টাইনের চেয়ে বেশি স্মার্ট লোক হয়তো তাঁর জীবদ্দশাতেই বেঁচে ছিলেন, আর তিনি হলেন সর্বকালের সেরা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নিকোলা টেসলা। তিনি অতি উচ্চ মাপের ব্যবহারিক বিজ্ঞানী ছিলেন। আইনস্টাইন যেমন তাত্ত্বিক বিজ্ঞানী ছিলেন, তেমনি টেসলা ছিলেন ‘ব্যবহারিক বা প্র্যাকটিক্যাল’ বিজ্ঞানী। একবার আইনস্টাইনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘স্যার, বর্তমান যুগের সবচেয়ে স্মার্ট লোক হতে পেরে আপনার কেমন অনুভূতি হয়?’ তখন তিনি উত্তরে বলেছিলেন, ‘কী জানি! সেটা আপনি বরং নিকোলা টেসলাকেই জিজ্ঞেস করুন।’ অর্থাৎ আইনস্টাইনের মতে, টেসলা তাঁর চেয়েও বেশি স্মার্ট ছিলেন।
আইনস্টাইন অবশ্য লোক চিনতে ভুল করেন নি, কারণ টেসলা যন্ত্র উদ্ভাবন করার আগে কোনো কাগজে তার ডিজাইন আঁকতেন না, বরং সেটা করতেন তিনি নিজের মাথায়। পরে মাথাতেই সেই যন্ত্রের ডিজাইন মডিফাই বা চেঞ্জ করতেন এবং বিভিন্ন কন্ডিশনে যন্ত্রটি ‘রান’ করলে কী হবে সেটার সাইমুলেশন তিনি তাঁর মগজেই করতেন। অর্থাৎ টেসলার ছিল ফটোগ্রাফিক মেমরি। অথচ জন্মসূত্রে ক্রোয়েশিয়া বা সার্বিয়ার নাগরিক হওয়ার কারণে আমেরিকান মিডিয়া তাঁর নাম ইতিহাসের পাতা হতে মুছে ফেলতে চেয়েছে, কারণ উক্ত দেশগুলো একসময় সোভিয়েট ইউনিয়নের মধ্যে ছিল। যাই হোক, টেসলা সম্পর্কে একটি আর্টিক্যাল রয়েছে এই ব্লগে, সেটা পঠনের আহ্বান থাকলো; রচনাটির শিরোনাম হলো, ‘সর্বকালের সেরা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার’।