প্রথমে বুঝতে হবে, যেকোনো উপযোগিতা বা সার্ভিসেরই ভালো ও মন্দ দিক রয়েছে। দেশে মোবাইল ফোন সার্ভিস চালু হয়েছিল ১৯৯৫ সালের দিকে। তারপর এ সার্ভিসের বিস্তৃতি ক্রমেই বাড়তে থাকায় জনগণ উপকৃত হয়েছে। আবার, মোবাইল টেলিফোনের অপব্যবহারও কম হয় নি। যেমনঃ ফোন করে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করা বা কিডন্যাপিং এর কাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা। তাই বলে কি আমরা কখনো মোবাইল টেলিফোন সার্ভিস ব্যবহার করা বন্ধ করেছি? অথবা কোনো সরকার কখনো কি সেটা করবে? অবশ্যই না।
আবার, পরমাণু শক্তির কথাই বিবেচনা করুন। এ শক্তি ব্যবহার করে যেমন সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে, তেমনি যুদ্ধে এর ব্যবহার দ্বারা ধ্বংসলীলাও কম চালানো হয় নি। তাই বলে কি মানব সম্প্রদায় পরমাণু শক্তি ব্যবহার বন্ধ করে দিবে? অবশ্যই না।
ঠিক তেমনি টিকটক নামক সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সার্ভিসেরও ভালো ও মন্দ দিক রয়েছে। ভালো দিক হলো – এটা এমন এক ধরনের নির্মল বিনোদন দেয় যা অন্য কোনো সার্ভিস যেমন, ফেসবুক বা ইউটিউব দিতে পারে না। ইউটিউবের দীর্ঘ ভিডিও দেখার ধৈর্য্য সবসময় থাকতে নাও পারে, সেসময় টিকটকের শর্ট ভিডিওগুলো চমৎকার বিনোদন দিতে সক্ষম। টিকটকের মাধ্যমে ইয়াং জেনারেশন তথা যেকোনো বয়সের লোক তাদের নাচ-গানের মেধা বা প্রতিভা সর্বসাধারণের কাছে তুলে ধরতে পারছে। কেউ কেউ কমেডি ভিডিও বানাচ্ছে, কেউ বানাচ্ছে শিক্ষামূলক ভিডিও, আবার অনেকে ধর্মীয় ভিডিও বানিয়ে ধর্ম প্রচারের কাজ করছে। এসব করে অনেকে ইউটিউবিং এর মতো টিকটকেও অর্থ উপার্জন করছে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বা স্পন্সরশিপের মাধ্যমে।
সুতরাং টিকটকে ফেমাস হওয়ার লোভ দেখিয়ে মেয়েদেরকে কৌশলে ভারতে পাচার করা হচ্ছে বা টিকটকে বুঁদ হয়ে ইয়াং জেনারেশন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে দেশে টিকটক ব্যান করা ঠিক হবে না। কারণ পাচারের মতো অপকর্ম করছে মুষ্ঠিমেয় লোক, আর দেশে টিকটক ব্যবহার করে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ। শামিমা আফরিন ওমি নামক এক বাংলাদেশি টিকটকারের ৩৯ লক্ষ ফলোয়ার রয়েছে।