এক বছর আগে স্থানীয় এক স্কুলছাত্র মোবাইল ফোন কিনে না দেয়ায় আত্মহত্যা করেছিল। তাই ছেলে ফোনের বায়না করতেই ভয় পেয়ে যান পূর্ণ সর্দার।
পেশায় ফুচকা বিক্রেতা এ বাবার আশঙ্কা ছিল ফোন না পেলে তার ছেলেও হয়তো আত্মহত্যা করবে। এ কারণে ছেলেকে তড়িঘড়ি ফোন কিনে দেন।
কিন্তু আত্মহত্যা ঠেকাতে কিনে দেয়া সেই মোবাইল ফোন বিস্ফোরিত হয়েই পূর্ণ সর্দারের ১৭ বছরের ছেলে প্রসেন সর্দার নিহত হয়েছে।
ফোন চার্জে রেখে কথা বলার সময় বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিষ্ণুপুর থানার দক্ষিণ গৌরীপুরের সর্দারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার শেরপুরের একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত প্রসেন। বুধবার স্কুলে না গিয়ে সে দাদি সরলা দেবীর সঙ্গে বাড়িতে ছিল।
প্রসেনের এক আত্মীয় জানান, দুপুরে চার্জে রেখে মোবাইল ফোনে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিল প্রসেন। হঠাৎ করেই সে মাটিতে পড়ে ছটফট করতে থাকে। এ অবস্থায় তার দাদি প্রতিবেশীদের ডেকে আনেন।
পরে অচেতন অবস্থায় প্রসেনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসেনের বাবা পূর্ণ সর্দার ফুচকা বিক্রি করেন। বছরখানেক আগে ছেলেকে তিনি ফোন কিনে দেন।
প্রসেনের এক আত্মীয় বলেন, ফোনের চার্জার থেকে যে এই ঘটনা ঘটতে পারে, তা আমাদের জানা ছিল না।
ওই আত্মীয় জানান, এক বছর আগে বিষ্ণুপুর এলাকায় মোবাইল কিনে না দেয়ায় এক স্কুলছাত্র আত্মহত্যা করেছিল। এ কারণে প্রসেন বায়না করায় অনেক কষ্টে তার বাবা চার হাজার রুপিতে ছেলেকে ফোন কিনে দেন।
প্রসেনের বড় বোন বলেন, আমার ভাই সারা দিনই মোবাইলে কথা বলত। ওকে বলেছিলাম, ফোনে এত কথা বলা ভালো নয়। কিন্তু শুনত না। সেই ফোনের নেশাই যে ওর জীবনটা এভাবে ছিনিয়ে নেবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ফোন চার্জ দেয়ার সময় কথা বলা উচিত নয়। এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। আমরাও এ বিষয়ে সচেতনতার প্রচার করার বিষয়টি নিয়ে ভাবছি।